কারাগারে থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী-উপমন্ত্রী ও হাইপ্রোফাইল নেতাদের মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। নতুন করে রিমান্ড শুনানিসহ নতুন মামলায় আদালতে তোলা হয় তাদের।
শুনানিতে এসময় আদালতকক্ষের কাঠগড়ায় একটানা ৪৫ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, রাশেদ খান মেনন, শাজাহান খান, প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, জুনায়েদ আহ্মেদ পলক ও উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবকে। তাদের সঙ্গে দেখা গেছে সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনিকেও।
বুধবার সকাল ৯টায় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে বিচারের কার্যক্রম শুরু হলে একে একে আদালতের কাঠগড়ায় আনা হয় আওয়ামী লীগের এই হাইপ্রোফাইল নেতাদের।
এসময় বিচারকার্য শুরু হলে উপমন্ত্রী জ্যাকবের বিরুদ্ধে রিমান্ডের আবেদন করেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিরা। উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে আদালত শামীম হাওলাদার হত্যা মামলায় জ্যাকবকে তিন দিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দেন।
এরপর উত্তরার জসীমউদ্দীন সড়কে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের দিন ফজলুল করিম নামের এক যুবককে গুলি করে হত্যার মামলায় আনিসুলের রিমান্ড শুনানি শুরু হলে তার রিমান্ড আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। অন্যদিকে আনিসুল হকের আইনজীবী রিমান্ডের বিরোধিতা করে আদালতে বক্তব্য রাখেন।
আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে আনিসুলকে ৫ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন। আনিসুলের বিরুদ্ধে মোট ৫৫টি মামলা হয়েছে। ৭টি মামলায় এখন পর্যন্ত তার মোট ৪৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
পরে রাশেদ খান মেনন, শাজাহান খান ও আনিসুল হককে মোহাম্মদপুর থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত।
এছাড়াও সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী দীপু মনিকে আদালতে তোলা হলে পল্টন থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। অন্যদিকে মিরপুর থানার একটি হত্যা মামলায় কামাল আহমেদ মজুমদারকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। প্রায় ৪৫ মিনিট শুনানি শেষে বিচারক এজলাস ত্যাগ করেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে ঢাকাসহ সারা দেশে ২৫৩টি মামলা হয়েছে। সালমানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ৪৮টি। রাশেদ খান মেননের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ২২টি। জুনাইদ আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ৪৭টি। দীপু মনির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ২০টি।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এরপর ১৩ আগস্ট প্রথম গ্রেপ্তার হন আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমান। পরদিন তাদের আদালতে তোলা হয়। এরপর দীপু মনিসহ বেশ কয়েকজন নেতাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে নেওয়া হয়।
এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকজন সাবেক মন্ত্রী, সরকারি আমলা, আওয়ামী লীগ নেতা, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশার অন্তত ৯০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
খুলনা গেজেট/এনএম